এসইও (SEO) এর অর্থ সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (Search Engine Optimization)।
এটি একটি মাধ্যম যার দাড়া সার্চ ইঞ্জিনের ফলাফল পৃষ্ঠায় কোনও ওয়েবসাইটের দৃশ্যমানতা বাড়াতে সাহায্য করে।
এসইও কেন?
এসইও ফল পৃষ্ঠায় ওয়েবসাইটকে আরও ভাল র্যাঙ্ক করতে সহায়তা করে।
তাই সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন দারা ভাল র্যাঙ্কিং এর কারণে ওয়েবসাইটটি আরও ট্রাফিক পাওয়া যায়, উন্নত এক্সপোজার এবং উপার্জনের আরও সুযোগ তৈরি করতে সাহায্য করে।
সার্চ ইঞ্জিন (search engines) কি?
সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন সম্পূর্ণরূপে সার্চ ইঞ্জিনের উপর নির্ভর করে। তাহলে আমাদের জান্তে হবে কি কি সার্চ ইঞ্জিন আছে ।
সার্চ ইঞ্জিন সফ্টওয়্যারের নকশা করা হয়েছে ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবে তথ্য অনুসন্ধানের জন্য ।Google, Yahoo, Bing, Baidu, Ask, AOL Search, WebCrawler, MyWebSearch, Infospace, Dogpile, and DuckDuckGo কয়েকটি সার্চ ইঞ্জিনের নাম।
Google হল শীর্ষস্থানীয় সার্চ ইঞ্জিন এবং ৮০% – ৯০% লোক বিশ্বজুড়ে এটি ব্যবহার করে থাকে । বাকি ২০% – ১০% উল্লিখিত অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করে থাকে।
সার্চ ইঞ্জিন search engine কিভাবে কাজ করে?
সার্চ ইঞ্জিনের দুটি প্রধান কার্য রয়েছেঃ
ক্রলিং এবং ইনডেক্সিং এছাড়াও প্রাসঙ্গিক ফলাফল সরবরাহ করা।
সার্চ ইঞ্জিনগুলি ওয়েবসাইটের সোর্স কোডটি পড়তে ক্রোলার বা স্পাইডার নামক প্রোগ্রামগুলি ব্যবহার করে থাকে এবং তাদের স্থানীয় সার্ভারে এই ডেটা সংরক্ষণ করে। এই কৌশলটিকে ওয়েবসাইটের ক্রলিং বলা হয়।
একটি ওয়েবসাইট সাধারণত বছরে 3 থেকে 4 বার ক্রল করা হয়।
এর পরে, ইনডেক্সার ক্রলারের স্থানীয় সার্ভার থেকে ডেটা নেয় এবং সেই ডেটা গুলিকে হোটেল, হাসপাতাল, স্কুল, রেস্তোঁরা ইত্যাদির বিভাগে ভাগ করে মূল ডাটাবেসে সংরক্ষণ করে থাকে ।
রাঙ্ক অ্যালগরিদম এমন একটি প্রোগ্রাম যা ওয়েবসাইটের ডেটা অনুসারে ওয়েবসাইটকে স্থান দেয়, যখন কোন ব্যবহারকারী সার্চ ইঞ্জিনে কোনও ক্যোয়ারী টাইপ করে, সার্চ ইঞ্জিনটি তাদের ডাটাবেসের কীওয়ার্ডগুলির সাথে মিলিয়ে এবং র্যাঙ্ক অ্যালগরিদম দ্বারা নির্ধারিত র্যাঙ্ক অনুসারে কীওয়ার্ড যুক্ত ওয়েবসাইটটি উপস্থাপন করেType of SEO?
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন তিনটি ভাগে বিভক্ত।
- হোয়াইট হ্যাট এসইও (White Hat SEO)
- ব্ল্যাক হ্যাট এসইও (Black Hat SEO)
- গ্রে হ্যাট এসইও (Grey Hat SEO)
হোয়াইট হ্যাট এসইও?
হোয়াইট হ্যাট এসইও (White Hat SEO) হল সার্চ ইঞ্জিনের গাইডলাইন (প্রধানত Google) অনুযায়ী ওয়েবসাইটটিকে অপ্টিমাইজ করা।
- এটি এথিকাল বা অরগানিক এসইও হিসাবে বিবেচিত হয়।
- ব্যবহৃত কৌশলগুলি হল অন পেইজ অপ্টিমাইজেশন এবং অফ পেইজ অপ্টিমাইজেশন।
- এই কৌশলটি সার্চ ইঞ্জিনগুলি গ্রহণ করে।
- সার্চ ইঞ্জিনগুলি দ্বারা নিষিদ্ধ হওয়ার ঝুঁকি হোয়াইট হ্যাট ব্যবহারকারী ওয়েবসাইটগুলির পক্ষে খুব কম থাকে।
- হোয়াইট হ্যাট এসইও ব্যবহার করা ওয়েবসাইটগুলির প্রভাব স্থির, ধীরে এবং দীর্ঘস্থায়ী আশা করতে পারা জায়।
ব্ল্যাক হ্যাট এসইও?
ব্ল্যাক হ্যাট এসইও (Black Hat SEO) সার্চ ইঞ্জিনগুলির গাইডলাইনগুলোকে কাজে লাগায় এবং পেইজ এর র্যাঙ্কিং বাড়ানোর জন্য নেগেটিভ পদ্ধতিগুলি ব্যবহার করে।
- এটি আনএথিকাল এসইও হিসাবে বিবেচিত হয়।
- লিঙ্ক স্প্যাম, কীওয়ার্ড স্টাফিং, ক্লোকিং, হিডেন লিঙ্ক এবং টেক্সট কয়েকটি ব্ল্যাক হ্যাট এসইও এর কৌশল।
- ব্ল্যাক হ্যাট এসইও এর অধীনে ব্যবহৃত কৌশলগুলি সার্চ ইঞ্জিনগুলির নির্দেশিকাগুলির পরিপন্থী এবং তাই এগুলো নিষিদ্ধ বা কালো তালিকাভুক্ত।
- ব্ল্যাক হ্যাট এসইও ব্যবহার করে ওয়েবসাইটগুলি র্যাঙ্কিংয়ে দ্রুত বৃদ্ধি লাভ করে তবে এই পরিবর্তনটি অনাকাঙ্ক্ষিত ।
গ্রে হ্যাট এসইও?
গ্রে হ্যাট এসইও (Grey Hat SEO) হ’ল এসইও যা ঝুঁকি নেয় অর্থাত্ ব্ল্যাক হ্যাট এসইওর সীমানা নির্ধারণ করতে পারে এমন কৌশল ব্যবহার করে।
- গ্রে হ্যাট এসইও কৌশলগুলির মধ্যে কিছু ক্ষেত্রে বৈধ এবং আবার কিছু অবৈধ।
- ডোরওয়ে পেইজএস, গেটওয়ে পেইজএস, ডুপলিকেট কন্টেন্ট এগুলো হ’ল গ্রে হ্যাট এসইও।
কীওয়ার্ড অনুসন্ধান কি?
কীওয়ার্ড অনুসন্ধান হল (Keyword Research), ব্যবহারকারীর দ্বারা সার্চ ইঞ্জিনে তথ্য সন্ধানের জন্য যে ধরনের শব্দ ব্যাবহার করে থাকে তা খুঁজে বের করা।
এই কীওয়ার্ডগুলি একক শব্দ বা দীর্ঘ-শব্দ পদ হতে পারে। কীওয়ার্ড গবেষণা একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এসইও এঁর জন্য, কারণ এটির দ্বারা দর্শনার্থীদের ব্যবহৃত কীওয়ার্ড গুলো কে খুঁজে বের করা হয় জেন সেই দর্শনার্থীগুলো ওয়েবসাইট এ প্রবেশ করাতে পারে ।
এই কীওয়ার্ড অনেক কিছুর উপর ভিত্তি করে পরিবর্তিত হতে পারেঃ
- ওয়েবসাইট – পেইজ এঁর সংখ্যা, ওয়েবসাইট এঁর গুণগতমান এবং সামগ্রীর ধরণ ইত্যাদি।
- ওয়েবসাইটের উদ্দেশ্য – ব্র্যান্ড প্রচার করা, তথ্য সরবরাহ, বিক্রয় ইত্যাদি।
- টার্গেট অডিয়েন্স এর উপর।
- ইন্ডাস্ট্রি এবং প্রতিযোগিতা।
- ইত্যাদি আরও অনেক কিছু ।
অন পেইজ অপ্টিমাইজেশন
অন পেইজ অপ্টিমাইজেশন (On Page SEO) হোয়াইট হ্যাট এসইওর একটি অংশ। এই অন পেইজ অপ্টিমাইজেশন ওয়েবসাইট এর ফলাফলকে সার্চ ইঞ্জিনে আসতে সাহায্য করে থাকে।
- নিম্নলিখিত পয়েন্ট গুলো অন পেইজ অপ্টিমাইজেশনের জন্য ব্যাবহার করা হযKeyword Analysis
- Competitor Analysis (Website)
- Title Optimization
- Meta Description Optimization
- Heading (H1, H2, H3, H4, H5, H6)
- Bold
- Hyperlink
- Alt Text
- Permalink/ Slug/ URL Optimization
- Image Optimization
- Css & JavaScript Optimization
- Speed Optimization
- Internal Linking
- External Linking
- Sitemap
- Robots.txt
- Search Console Setup
- Google Analytics
কন্টেন্ট অপ্টিমাইজেশন
- কন্টেন্ট অপ্টিমাইজেশন (Content Optimization) বলতে সাইটের পৃষ্ঠাগুলিকে আরও তথ্যবহুল এবং আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য ব্যবহৃত কৌশলগুলিকে বোঝায় – এবং তা সার্চ ইঞ্জিন এবং দর্শনার্থীদের জন্য করা হয় । এই বিষয়বস্তুটির মধ্যে রয়েছে – Title, Meta Description, Image, Alt text, Tag etc.ওয়েবসাইটের কন্টেন্ট অবশ্যই জেনুইন হতে হবে, কোনও ওয়েবসাইট থেকে অনুলিপি করা যাবে না।
- বিষয়বস্তু অবশ্যই সাইটের সাথে প্রাসঙ্গিক এবং মূলশব্দ সমৃদ্ধ হতে হবে।
- ওয়েব পৃষ্ঠাগুলিতে উপস্থিত সামগ্রীগুলি একটি পেইজ এর সাথে অপরের সংযোগ স্থাপন করতে হবে যাতে ভিজিটর সাইটে আরও বেশি সময় ব্যয় করে।
- শিরোনামটি অবশ্যই পেইজ সাথে প্রাসঙ্গিক হতে হবে এবং প্রতিটি পৃষ্ঠার জন্য একই হবে না।
- সাইটে অবশ্যই কোনও ভাঙা লিঙ্ক থাকবে না।
- চিত্রগুলি এবং অ্যাঙ্কর ট্যাগটি অবশ্যই যথাযথভাবে অপ্টিমাইজ করা থাকতে হবে।
অফ পেইজ অপ্টিমাইজেশন
অফ পেইজ অপ্টিমাইজেশন (Off Page SEO) হ’ল হোয়াইট হ্যাট এসইওর একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, এটি অন পেইজ এসইওর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ লিঙ্ক বিল্ডিং অফ পেইজ এর প্রধান অংশ, যা যেকোনো সাইটকে র্যাঙ্ক করতে সাহায্য করে থাকে ।
অফ পেইজ পেইজ এসইওর অধীনে ব্যবহৃত কৌশলগুলি হ’ল –
- Back linking
- Directory Submission
- Blogging
- Social Bookmarking
- Forum Posting
- Blog Commenting
- Photo Sharing
- Video Marketing
- Local Listing
- Article/PDF Submission
- Question-answer site
- Business Reviews
- Press Release
- CSS Submission
Google Search Console or Webmaster Tool
গুগল ওয়েবমাস্টার অথবা সার্চ কনসোল (Google Search Console or Webmaster Tool) এর কাজ হল ওয়েবসাইট কে গুগলে ইনডেক্স করার জন্য রিকোয়েস্ট করা।
যার দরুন গুগল এর বট ওয়েবসাইট এ এসে ভাল মত ওয়েবসাইট টিকে পর্যালোচনা করবে এবং গুগল এর নিয়ম যদি ঠিক মত মেনে ওয়েবসাইট এর কাজ করা হয় তাহলে গুগল সেই ওয়েবসাইট টিকে তার ডাটাবেসে সংযুক্ত করবনির্ধারিত সময় ৪ ঘণ্টা থেকে ৪ দিন পর্যন্ত নিতে পারে, কখনো এই সময় বেরে ১/২ সপ্তাহেও পরিণত হতে পারে।
গুগল অ্যানালিটিক্স
গুগল অ্যানালিটিক্স (গুগলে Analytics) এর মাধ্যমে ওয়েবসাইট এ কি রকম ভিজিটর আসছে, কতোখন থাকছে, কি কি করছে শব কিছু পর্যবেক্ষণ করা যাবে।
পরিশংখান এর উপর বিশ্লেষণ করে ওয়েবসাইটটিকে ব্যাবহার কারিদের জন্য আরও উপযোগী করে তোলা যাবে এই অ্যানালিটিক্স এর মাধ্যম।
এসইও জানতে হলে বা ভালো মত এঁর উপর কাজ করতে চাইলে উপরের পয়েন্ট গুলোকে ভালো করে আয়ত্ত করতে হবে, এবং তা ক্রমাগত করে যেতে হবে, সব সময় চেষ্টা করতে হবে হাতে কলমে কাজ করার ।
তাহলেই একজন ভালো মানের এসইও এক্সপার্ট হিসেবে নিজেকে তৈরি করা সম্ভব হবে।